জমজ বাচ্চা হওয়ার উপায় ও আমল

আসসালামু আলাইকুম, নিশ্চয় আপনারা ভালো আছেন। আজকে  আমরা খুব মজার একটা বিষয় নিয়ে কথা বলবো। বিষয়টা হচ্ছে জমজ বাচ্চা কিভাবে হয়? জমজ কথাটা শুনতে খুব ভালো লাগে। আমরা অনেক সময় ছবিতে দেখি দুই জন এক রকম কাপড় পড়ে আছে, দুইজন এক রকম সেজে আছে এবং  কাউকে আলাদা করা যাচ্ছে না ইত্যাদি। এই যমজ বাচ্চা বা জমজ ভাই-বোন নিয়ে অনেক সিনেমাও তৈরি হয়েছে। মূলত এখান থেকেই জমজ বাচ্চা নিয়ে সবার মধ্যে একটা কৌতুহল এবং আগ্রহ জাগে তাদের যদি জমজ সন্তান হতো। এবং তারা জানতে চান জমজ বাচ্চা কিভাবে হয়? মূলত তাদের জন্যই আজকের এই পোষ্টটি।

জমজ বাচ্চা হওয়ার উপায়

প্রথমে জেনে নিই জমজ সন্তান কয় ধরনের হয়। আসলে জমজ বাচ্চা দুই ধরনের হয়ে থাকে। এক, দেখতে একই রকম, শরীরের রং একই, লম্বাও একই হয়ে থাকে। তবে অবশ্যই কিছু না কিছু একটু অমিল থাকবেই। দুই, একই দিনে গর্ভপাত কিন্তু দুইজন শিশু পুরো আলাদা। কারো সাথে কারো কোনো মিলই নেয়।

জমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা:

  • গর্ভধারণের শুরু থেকেই বেশি বেশি শরীর খারাপ লাগতে থাকলে।
  • গর্ভাবস্থায় পেটের আয়তন স্বাভাবিক নিয়মের তুলনায় বেশি বাড়লে।
  • পরিবারে কেউ যমজ থাকলে।
  • চিকিৎসার মাধ্যমে নিঃসন্তান মায়েরা যখন গর্ভধারণ করেন।

সত্যি কথা বলতে জমজ বাচ্চা এটা কোন স্বাভাবিক জন্ম প্রক্রিয়া না। স্বাভাবিক জন্ম প্রক্রিয়া হচ্ছে একজন মা একটি মাত্র সন্তান প্রসব করবে। আর এর বিপরীতে যদি হয় দুইটা, তিনটা বা চারটা বাচ্চা তাহলে এটা জটিল গর্ভবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। জমজ বাচ্চা হওয়ার কিছু কারণ আছে। যেমন- যখন একটা ভ্রুণ নিষিক্ত হয় তখন সেটা যখন ভাগ হতে থাকে। সেই ভাগের কিছু নির্দিষ্ট দিন আছে দিন, দিন, দিন বা অন্যদিন। এই যে ভাগ হওয়ার নির্দিষ্ট দিন এই সময়ে কিছু জটিলতা দেখা দেয়। এই জটিলতা দেখা দিলেই তখন গর্ভের বাচ্চা জমজ হয়ে যায়। আবার আরেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ওভালুয়েশন মেয়েদের যে মাসিক মাঝামাঝি সময়ে হয় তার পরই যে ডিম্বাণু আসে সেখানে দুইটি ডিম্বাণু আসে। তখন কিন্তু এই দুইটি ডিম্বাণু দুইটি শুক্রাণুর সাথে মিলিত হবে। আর এর মিলনের ফলে যে জাইগোট তৈরি হবে এবং প্লানটেশন হবে। সেখান থেকে এটা আসতে আসতে ভ্রুণে পরিণত হবে। আসলে এই ভাবেই জমজ বাচ্চা হয়ে থাকে।

জমজ বাচ্চা যদি দুইটা আলাদা আলাদা হয় তাহলে খুব ভালো কথা। কিন্তু যদি দেখা যায় দুইটি মাথা ঠিকই আছে কিন্তু শরীর একটা তাহলে এটা খুবই কষ্টের কথা। কেননা এটা সেই বাচ্চাগুলোর জন্যও যেমন কষ্টকর তেমনি তাদের পরিবারের জন্যও অনেক কষ্টকর। তাহলে জমজ বাচ্চা কারও কাম্য না করায় ভালো। তাছাড়াও বর্তমানে এই ব্যপারে অনেকই ডাক্তারের কাছে যান যেন তাদের জমজ বাচ্চা হয়।

এখন অনেক দম্পতিই নিঃসন্তান। তারা যদি কোন ডাক্তারের কাছে যায় তাহলে ডাক্তার কিছু ওষুধ লিখে দেন। আসলে এই ওষুধগুলো মায়ের দ্রুত ভ্রুণ আসার জন্য দেওয়া হয়। এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সময় তাদের গর্ভে দুইটা ভ্রুণ সৃষ্টি হয়। আর এর কারণেই সেই দম্পতির যমজ সন্তান হয়। অনেকই এখন চিন্তা করছেন তারাও এখন ডাক্তারের কাছে গিয়ে সেই ওষুধ খেয়ে জমজ সন্তান লাভ করবেন। এটা সম্পন্ন একটা ভুল ধারণা।

আসলে, জমজ বাচ্চা হলেও কিছু সমস্যা আছে। আমরা সবাই জানি স্বাভাবিক ভাবে একজন নারী যখন গর্ভবতী হয় তখন তার শরীরের কিছু পরিবর্তন হয়। এবং এই সময়ে সে অনেক সমস্যার সম্মূখীন হয়ে থাকে। আর সেটা যদি জমজ বাচ্চা হওয়ার অবস্থা থাকে তাহলে সেই গর্ভবতী মা কেমন সমস্যা সম্মূখীন হবে একবার চিন্তা করেন। বিশেষ করে যখন , বা  মাস সময় আসে তেখন তার পেটের আকার অনেক বড় হয়ে যায়। আর পেট যখন অনেক বড় হয়ে যায় তখন অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমন তার শ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়, তার চলাফেরার অনেক কষ্ট হয় এবং রাতের বেলায় সে ঠিক মতো ঘুমাতে পারে না।

ডাক্তারেরা গর্ভবতী নারীদের অনেক পুষ্টিকর খাবার খেতে বলেন। যদি জমজ বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই দ্বিগুণ খাবার খেতে হয়। এবং এই সময়ে অনেক মা অপুষ্টিতে ভোগেন। অপুষ্টিতে ভোগার কারণে তার যে দশ মাসের যাত্রাটা শুভ হয় না এবং অনেক সময় অনেক জটিলতা দেখা দেয়। এই যে জমজ বাচ্চাগুলো সেটা অনেক সময় সময়ের আগেই গর্ভপাত হয়ে থাকে। তো বাচ্চা যখন সময়ের আগেই বেরিয়ে আসেন তখন বাচ্চাদের অনেক নিবিড় যত্নের মাধ্যমে বা আইসিওতে রাখতে হয়।

কিভাবে বুঝবেন গর্ভের সন্তান জমজ?

প্রকৃতপক্ষে এমন কোন লক্ষণ নাই যে যা দেখে বুঝা যায় বাচ্চা জমজ। কিন্তু সম্ভাব্য কিছু কারণ থাকলে ধারণা করা হয় গর্ভের সন্তান জমজ।

  • গর্ভে জমজ সন্তান আছে কি না, তা বুঝার জন্য প্রধান উপায় হচ্ছে আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান করা।
  • গর্ভাবস্থায় গর্বাবস্থায় ১৪ সপ্তাহ পর্যন্ত যাদের বমি আসতেই থাকে তাদের জমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • শরীরের ক্লান্তি স্বাভাবিক গর্ভধারণের থেকে বেশি হবে।
  • যাদের গর্ভে জমজ সন্তান থাকে তাদের রক্তে এইচসিজির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি।
  • গর্ভাবস্থায় ওজন বাড়া স্বাভাবিক ব্যপার। কিন্তু সেটা যদি অনেক বেশি হয়ে যায় তখন ধারণা করা হয় গর্ভের বাচ্চা জমজ।

উপরোক্তি একটি কারণ ছাড়া আর বাকি গুলো সম্ভাব্য কারণ হিসাবে বিবেচিত। দয়া করে কেউ এই কারণগুলো কেউ গুরুত্ব সহকারে নিবেন না।

জমজ বাচ্চা হলে কত সপ্তাহে সিজার করতে হয়?

অধিকাংশ সময়ে দেখা গেছে জমজ বাচ্চা হলে সময়ের আগেই গর্ভপাত হয়ে যায়। আমরা উপরোক্ত আলোচনাতে সেই বিষয়টি তুলে ধরেছি। তারপর মোটামুটি ৩৭ সপ্তাহকে ধরা হয় জমজ বাচ্চা সিজার করা উপযুক্ত সময়।

কি খেলে জমজ বাচ্চা হয়?

প্রচলিত একটা ভুল ধারণা আছে যে, যমজ কলা খেলে জমজ সন্তান হয়। এটা আসলে একটা ভুল ধারণা এবং ইসলামে এটা কুফুরী। যদি এমন কোন খাবার থাকতো তাহলে ডাক্তারেরা অবশ্যই বলতো। তাই এমন কোন খাবার নাই যে খাবার খেলে জমজ বাচ্চা হবে।

কি আমল করলে জমজ সন্তান হবে?

জমজ সন্তান লাভের কোন আমল বা বিশেষ কোন দোয়া নেয় যা করলে আপনার জমজ সন্তান হবে। আপনাদের উচিত সব সময় মহান আল্লাহর কাছে নেক সন্তান এবং সুস্থ সন্তান আশা করা। অবশ্যই সেটা নির্দিষ্ট করে বা জমজ সন্তান আশা করে দোয়া করা উচিত নয়।- শায়খ আহমাদুল্লাহ

জমজ সন্তান কেন হয়?

এই প্রশ্নের উত্তর উপরোক্ত আলোচনা করা হয়েছে। দয়া করে উপরোক্ত তথ্যগুলো ভালো করে পড়ুন।

জমজ বাচ্চা হওয়ার আমল

ইসলামী ভাষায় জমজ সন্তান কেন হয়?

আসলে এটা আল্লাহ প্রদত্ত একটা কারণ। মানুষ চাইলেইর এর কোন নির্দিষ্ট কারণ বের করতে পারবে না। আর ইসলামে জমজ বাচ্চা হওয়ার সুনির্দিষ্ট কোন কারণ ব্যাখ্যা করে নি।

নবীনতর পূর্বতন