থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সেরা দর্শনীয় স্থান - The Best Places to visit in Thailand

থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সেরা দর্শনীয় স্থান

থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সেরা দর্শনীয় স্থান

আমার নাম হচ্ছে নাদির। আমি একজন ফুলটাইম ট্র্যাভেল ব্লগার। এবং আমি গত দশ সপ্তাহ ধরে থাইল্যান্ডের চমৎকার দেশটাকে ঘুরে ফিরে এক্সপ্লোর করছি। একদম থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে শুরু করে দক্ষিণ দিকের চমৎকার বীচগুলো। আর সুন্দর সুন্দর আইল্যান্ডগুলো থেকে শুরু করে উত্তর দিকের পাহাড়গুলো এবং চমৎকার প্রকৃতি পর্যন্ত সবকিছু ঘুরে ফিরে দেখেছি। এবং এই পোষ্টে আমি আপনাদের বলবো আমার থাইল্যান্ডের টপ দশটা প্রিয় জায়গা। এবং এই পোষ্টের শেষ পর্যন্ত পড়বেন কারণ শেষে একদম আমার পছন্দের দুইটা জায়গার কথা বলবো।

ফি ফি আইল্যাল্ড

ফি ফি আইল্যাল্ড

আচ্ছা, প্রথমে যাই হচ্ছে আমরা দক্ষিণের একদম পিকচার পারফেক্ট ফি ফি আইল্যাল্ডগুলোতে। এটা মূলত থাইল্যান্ডের সাউথওয়েস্ট এর দিকে ভারত মহাসাগরের মধ্যে ছয়টি ভিন্ন দ্বীপ। এবং এই দ্বীপগুলো হচ্ছে আমার দেখা থাইল্যান্ডের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর আইল্যান্ড। এবং এটা একটা ন্যাশনাল পার্ক, এর জন্য দ্বীপগুলো এখন পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে সংরক্ষিত আছে। মেইন দ্বীপটার নাম হচ্ছে ফি ফি ডন, যেখানে আপনারা গিয়ে থাকতে পারবেন। খুব সুন্দর একটা উপসাগর আছে, যেখানে বেশ কয়েকটা হোস্টেল আছে। এবং অনেক বড় একটা পার্টি করার জায়গা, এই দ্বীপটা অনেক মানুষের জন্য। আমি বলবো যে আপনারা ওখানে পার্টি করতে গেলেও আমি যেই জায়গাটাতে ছিলাম, ব্লাংকো বীচ বার। ঐ হোস্টেলে আপনারা বা এ হোস্টেলের আশেপাশে থাকবেন না। কারণ ওখানে এতো শব্দ যে রাতে আপনি ঘুমাতে পারবেন না। কিন্তু এমনি রাতে ঘুরতে যাওয়ার জন্য ভালো একটা জায়গা। তো বীচের বাইরে, এই আইল্যান্ডের বাহিরে আপনারা একটা বোট ট্রিপ নিয়ে অবশ্যই আশেপাশে যেতে পারেন। আমি একটা পার্টি বোটে গিয়েছিলাম আসলে, যেটা মূলত সব মনোরম দৃশ্যের জায়গাগুলোতে গিয়েছে। কিন্তু মাঝখানে মানুষ পার্টিও করছিলো বা সমুদ্রের মধ্যে লাফ মারছিলো। তো ফি ফি ডন এর আরেকপাশে একটা জায়গা আছে মাংকি বে। নৌকায় করে ওখানে গিয়ে দেখবেন অনেকগুলো বানর। বানর ধরতে যাবেন না, কারণ আপনাকে কামড় বা খামচি মারতে পারে। পরে রেসিস শট লাগবে আমার মতো। এবং আরেকটা খুবই চমৎকার জনবতসিহীন বা মানুষ থাকে না এই রকম একটা আইল্যান্ড আছে, যেটার নাম হচ্ছে কো ফি ফি লেহ। আপনাদের হয়তো মনে থাকতে পারে যে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এর একটা সিনেমা ছিলো ‘দ্য বীচ’ নামের, যেখানে থাইল্যান্ডে ও ব্যাকপ্যাক করতে  গিয়ে একটা চমৎকার বীচে যায়। সেই বীচটা হচ্ছে এই আইল্যান্ডের মাধখানে ‘মায়া বে’ নামের একটা জায়গা। আমি যখন সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম, এটার মধ্যে পানিতে আপনাকে নামতে দেয় না, সংরক্ষণের কারণে। কিন্তু আপনারা বীচে গিয়ে দেখতে পারবেন খুবেই চমৎকার একটা সমুদ্র। এই আইল্যান্ডটায় আপনারা আসতে পারবেন শুধুমাত্র বোট ট্যুরে, কারণ এখানে কাউকে রাতে  থাকতে দেয় না।

ব্যাংকক

ব্যাংকক

ব্যাংকক ছিলো ২০২৩ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে পরিদর্শন করা শহর, যেখানে ২২ মিলিয়ন দর্শনার্থী এসেছে। একটা বিশাল মেগা সিটি যেটা  ছাও ফ্রায়া নদীর তীরে অবস্থিত। টিভিতে যেমন দেখেন অনেক পাগলামি, অনেক পাটি। যদিও এইরকম পাগলা পার্টি দেখতে যান, তাহলে আমি বলবো ব্যাংককের বিখ্যাত খাওসান রোডে যাবেন। ওখানে মানুষ পার্টি করবে ঠিকই কিন্তু সবচেয়ে মজার আমার কাছে লেগেছে যে মানুষ কী সব আজব জিনিস খায়। ওখানে দেখলাম যে কুমির মানে রান্না করে খাওয়াচ্ছে মানুষকে। তারপর অনেকে বিচ্ছু খাচ্ছে বা স্করপিয়ান খাচ্ছে। শুধু গেলে আপনার পকেটটাকে একটু সাবধানে রাখবেন, কারণ ওখানে আমার পকেট মারার চেষ্টা করেছে। আরো অবশ্যই সাবধানে থাকবেন যাতে আমার মতো মাথা ফাটিয়ে হাসপাতালে না যাওয়া লাগে। থাইল্যান্ডের স্ট্রীটফুডটা হচ্ছে চমৎকার। এমনকি রাস্তায় দেখবেন যে মিশেলিন স্টার শেফরা আপনাকে স্ট্রীটফুড বানায় খাওয়াচ্ছে এবং দাম পড়ছে মাত্র ২০০ টাকা। তো ব্যাংকক হচ্ছে ১৭৮২ সাল থেকে থাইল্যান্ডের রাজধানী। এবং অনেক ঐতিহাসিক জায়গা আছে। আপনারা যদি গ্র্যান্ড প্যালেস এ যা, তাহলে থাইল্যান্ডের রাজাদের প্রাক্তন যে বাসস্থান সেটা দেখতে পারবেন। এবং ওখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরও আছে বৌদ্ধ, যেগুলো আপনারা ভেতরে গিয়ে দেখতে পারবেন। পাশে অবশ্যই গ্র্যান্ড প্যালেস এর ওয়াট ফো টেস্পল কমপ্লেক্সেও যাবেন। কারণ ওখানে একটা খুব বড়, খুব সুন্দর একটা বৃদ্ধের মূর্তি আছে। অবশ্যই ভদ্র কাপড় চোপড় পড়ে যাবেন। মানে বড় টি-শার্ট, জিন্স। নইলে আপনাকে ঢুকতে দিবে না এই সব জায়গায়।

কাও সক ন্যাশনাল পার্ক

কাও সক ন্যাশনাল পার্ক

এটা খুবই চমৎকার জঙ্গল এবং জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে একটা ম্যানমেইড লেক। এবং এই লেকের মধ্যে দিয়ে আপনারা নৌকা ভাড়া করতে পারবেন, যেটাতে করে আপনারা ট্যুর দিতে পারবেন। এবং সবচেয়ে মজার জিনিসটা হচ্ছে লেকের মাঝখানে থেকে লাইমস্টোনের কিছু বড় বড় ক্লিফ একদম পিলারের মতো মাঝখান দিয়ে উঠে গিয়েছে চমৎকার একটা দৃশ্য এখানে। এখানে খুব দারুন আর বিরল পশুপাখি ওখানে দেখতে পারবেন। আর আমি বলবো ঐ জায়গাটার মধ্যে সেরা কাজ হচ্ছে ওখানে কয়েকটা ওয়াটার বাংলো আছে, মানে খুবই সাধারণ, পুরানো। এবং ঐসব জায়গায় কোন ফোনের নেটওয়ার্ক নেই। ঐ রকম একটা জায়গায় একটা ওয়াটার বাংলোতে গিয়ে এক রাত কাটাবেন। আর অবশ্যই ওখানে গিয়ে এই ওয়াটার বাংলোগুলো বুক করবেন। কারণ অনলাইন বুক করতে গেলে এটা অনেক খরচ পড়তে পারে।


আয়ুথায়া

আয়ুথায়া

মূলত এটা ব্যাংককের পাশেই অবস্থিত। মূলত এখানে এসেছিলাম আয়ুথায়া নামের একটা পুরানো শহরের ধ্বংসাবশেষ দেখতে। যেটা হচ্ছে ব্যাংকক থেকে মাত্র ৮০ কি.মি. এর মতো উত্তর দিকে, যেতে এক ঘন্টার একটু বেশি লাগবে। এবং ব্যাংকক কিন্তু ২৫০ বছর ধরে এই সিয়াম বা থাইল্যান্ডের রাজধানী হয়ে আসছে। কিন্তু তার আগে রাজধানী ছিলো এই আয়ুথায়া এবং বার্মিজ যেই রাজ্যটা ছিলো, বার্মার যেই রাজ্যটা, ঐ থাইল্যান্ডের পাশে ১৭৬৭ সালে এই শহরটাকে পুরো পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়। তো তারপর হয় ব্যাংকক রাজধানী। কিন্তু আপনারা এখনে গিয়ে পুরনো মন্দিরগুলো দেখতে পারবেন বা পুরানো বিল্ডিং ধ্বংসাবশেষগুলো দেখতে পারবেন। একটা খুবই বিখ্যাত মূর্তি আছে, যেটা বুদ্ধের মাথার মধ্য দিয়ে একদম মানে গাছ গজিয়ে গেছে। ঐটাও গিয়ে দেখতে পারবেন।

কো পান গান

কো পান গান

এখানকার খুবই বিখ্যাত একটা পার্টির জন্য জায়গা আর এটা হচ্ছে কো পান গান। ফুল মুন পার্টি যেটাকে বলা হয়। যেটা মাসে একবার হয় যখন ফুল মুন থাকে। এবং পুরো পৃথিবী থেকে মানুষ এসে এই বীচের মধ্যে পার্টি করে। তো আপনারা যদি খৃুবই টুরিস্টি, খুবই ভিড় থাকা, একটা পার্টি পছন্দ করেন তাহলে দেখতে পারেন। কিন্তু আমার আসলে গিয়ে ভালো লাগেনি। মানে বেশি টুরিস্টি লেগেছ জিনিসটা। বেশি ভিড়, বেশি মানুষ। কো পান গান এ সৌভাগ্যক্রমে এটা বাদে আরো অনেক কিছু করার আছে। সাড়া মাসেই এই নাইট লাইফ এই আইল্যান্ডটাতে ভালো আছে। এবং এখানে খুব বড় একটা হিপ্পি কমিইনিটি আছে বলতে পারেন। তো অনেক দেখবেন ইয়োগা রিট্রিটি বা স্পিরিচুয়াল রিট্রিট, পুরো মাস এখানে থাকে। আপনারা যদি ভালো স্কুটার চালাতে পারেন, তাহলে বলবো একটা খুবই বিখ্যাত ভিউপয়েন্ট আছে, সিক্রেট মাউন্টেইন ভিউপয়েন্ট। ওখানে পাহাড়ের উপর চালিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু রাস্তা ভালো না। কাঁচা রাস্তা তাই উঠতে পারবেন, নামতে পারবেন নাকি ঠিকমতো দেখে বুঝবেন। সব কিছু মিলিয়ে এই আইল্যান্ডটা ছিলো আমার প্রিয় শুধু আমার স্কুটার চালিয়ে বেড়ানোর জন্য।

আও নাং

আও নাং

থাইল্যান্ডের সাউথওয়েস্ট এর দিকে আছে একটা বিখ্যাত বীচ, যেটার নাম হচ্ছে আও নাং বীচ। এর চেয়ে ভালো সূর্যাস্তের জায়গা আমি পৃথিবীতে কমই দেখেছি চমৎকার ল্যান্ডস্কেপ। বিশাল একটা বীচ এবং আশেপাশে চমৎকার কিছু পাহাড়। খুবই দারুন একটা জায়গা। মানে এখানে আশেপাশে অনেক দোকানপাট, নাইট লাইফ বা সুন্দর রেস্টূরেন্ট আছে এই বীচে। আপনারা যদি কখনো ক্র্যাবিতে যান, এয়ারপোর্টসহ বাসস্ট্যান্ড সহ, ক্র্যাবির মেইন শহরে না থেকে আও নাং বীচে এসে থাকবেন। যেটা মাত্র ২০-৩০ কি.মি. দূরে এবং অনেক সুন্দর। এবং এখান থেকে আপনারা নৌকা ভাড়া করে আশেপাশে আইল্যান্ডগুলোতেও যেতে পারবেন। নৌকা ভাড়া করার কথা যখন বলছি, আও নাং বীচ থেকে ১৫ মিনিটের একটা নৌকা নিলেই আপনারা আসবেন হচ্ছে রেইলে বীচ নামে একটা জাযগায়। যেটাকে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক বছর পৃথিবীর টপ ১০টা বীচের মধ্যে সারিবদ্ধ করা হয়। গত বছর মনে হয় সপ্তম বীচ হিসেবে র‌্য্যাঙ্ক করা হয়েছিলো এবং আপনি গেলেই বুঝবেন কেন এটাকে এতো উচ্চ পর্যায়ে র‌্যাঙ্ক করা হয়। আমি হাওয়াই, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপে অনেক চমৎকার বীচ দেখেছি। এবং এটা হচ্ছে ‍ওগুলোর সাথে টপ বচি আমার দেখাগুলোর মধ্যে একটা। দুইপাশে দুইটা পাহাড় এই বীচের। তো যদিও মেইনল্যান্ড থাইল্যান্ডের একটা অংশ এটাতে ল্যান্ডে আসার কোন উপায় নেই। এটাতে আসার একমাত্র উপায় হচ্ছে এইরকম করে নৌকায় করে এসে সমুদ্রের মধ্যে মূলত আপনার নামতে হবে। এই জন্য অতো ভিড়ও নাই মানুষের এবং এখানে রাত কাটালে খুবই আরামে একটা খুবই শান্তিপূর্ণ রাত কাটাতে পারবেন। শুধু মাথায় রাখবেন যে স্যান্ডেল পরে নামতে হবে। নইলে আমার মতো জুতা মুখের মধ্যে ঢুকানো লাগবে।

চিয়াং মাই

চিয়াং মাই

এটি থাইল্যান্ডের একদম উত্তর দিকে অবস্থিত। আর এটাই হচ্ছে থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। আপনারা যদি উত্তরে যান, অবশ্যই খাও সই নামের একটা খাবার আছে, মূলত এটা নুডুলসের মতো। ওটা খেয়ে দেখেবে। ওটা হচ্ছে আমার প্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে একটা এবং উত্তর দিকের একটা স্পেশাল খাবার। চিয়াং মাই এর মধ্যে কয়েকটা সুন্দর সুন্দর বা মজার মজার নাইট বাজার আছে। যেখানে গিয়ে আপনারা বিভিন্ন স্ট্রীটফুড খেতে পারবেন বা অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে পারেন। এবং আশে পাশে চিয়াং মাই এর বেশ কয়েকটা এলিফ্যান্ট সেঙ্কচুয়ারি আছে, যেখানে বিভিন্ন হাতিদেরকে তারা উদ্ধার করে এখানে রাখে। অবশ্যই নৈতিক নাকি সেঙ্কচুয়ারিটা দেখবেন, কারণ হাতির পিঠে চড়া কিন্তু অত্যাচার এক ধরনের ওদের জন্য। তো এই রকম সেঙ্কচুয়ারিতে যাবেন না, যেখানে হাতিদের উপর আপনাকে চড়তে দেয়। কিন্তু হাতিদেরকে পুনর্বাসন করছে এমন জায়গায় যাবেন। এবং আশেপাশে বেশ কয়েকটা চমৎকার ঝর্ণাও আছে, যেটা আপনারা গিয়ে দেখতে পারবেন। আমি আমার থাইল্যান্ডের দশ সপ্তাহের মধ্যে দুই সপ্তাহের বেশি কাটিয়েছি হচ্ছে এই চিয়াং মাই এর মধ্যে। কারণ এতো শান্তিপূর্ণ, এতো আরামের একটা জায়গা ছিলো। চিয়াং মাই থেকে কাছে একটা শহর আছে পাই, ওখানে যাওয়ার জন্য ৩-৪ ঘন্টা একটা মোটরসাইকেল রাইড আছে যেটা খুবই চমৎকার। এবং আপনারা যদি যান, আমার মতো টি-শার্ট আর শর্টস পরে এটা করতে যাবেন না। কারণ পাহাড়ের উপর যখন বাতাসের মধ্যে স্কুটার চালাবেন তখন অনেক ঠান্ডা লাগে। সোয়েটার আর জিন্স পড়বেন। আমি আয়া রেন্টাল নামের একটা কোম্পানির কাছ থেকে স্কুটার ভাড়া করেছিলাম যারা আমার বড় ব্যাগটাকে ট্রান্সপোর্ট করে নিয়ে গিয়েছে পাইতে। যাতে আমার বহন না করতে হয় স্কুটারের উপরে। ডানে বামে দেখবেন পাহাড় আর ভ্যালি। কিন্তু এটা আমি বলবো অনভিজ্ঞদের জন্য না। যদি আপনারা স্কুটার ভালো মতো চালাতে পারেন তাহলেই চালাবেন নইলে দূর্ঘটনা ঘটার সুযোগ খুবই বেশি।

পাই

পাই

আমার প্রিয় জায়গাগুলোর মধ্যে পাই একটি। পাই মূলত ৩০০০ হাজার মানুষের গ্রাম যেখানে অনেক ব্যাকপ্যাকাররা যায়। কারণ অনেক অরগানিক খাবার, সস্তা হোস্টেল বা অনেক নাইট লাইভ আছে। পাই থেকে ১৫ মিনিট ড্রাইভ করে গেলে আপনারা আসবেন হচ্ছে পাই ক্যানিয়ান। যেখানে একটু হাইকিং করতে পারবেন বা ক্যানিওনিয়ারিং করতে পারবেন। এবং আমার দেখা সবচেয়ে চমৎকার সূর্যাস্তগুলোর মধ্যে একটা এবং যাওয়া খুবই সহজ এই জায়গাটাতে। পাই এর কাছে আরেকটা জায়গা আছে যেটা বিখ্যাত ব্যাম্বু ব্রিজ, যেখানে আপনারা হেঁটে এক্সপ্লোর করতে পারবেন। পাই থেকে এক ঘন্টা স্কুটারে করে যদি যান, এখানে খুবই বিখ্যাত একটা স্কুটার লুপ আছে যেটার নাম হচ্ছে মেয় হং সন লুপ। এই লুপটা ফলো করে গেলে আপনারা আসবেন থাম লট ক্যাভ কমপ্লেক্স নামের একটা জায়গায়। যেখানে খুবই বিশাল একটা গুহা। গুহার ভেতরে ২০ তলা উঁচু ছাদ। যেটার মধ্য দিয়ে আপনারা হেঁটেই যেতে পারবেন। মূলত একটা হারিকেনের লাইট ফলো করে আপনাকে গাইড নিয়ে যাবে। সবচেয়ে সেরা অংশ হচ্ছে ভেতরে একটা নদী আছে। ঐ নদীর উপরে একটা বাঁশের ভেলার উপর চড়ে আপনাকে ভেতর দিয়ে নিয়ে যাবে। এবং বড় বড় মাছ আপনাকে ফলো করবে যাদেরকে আপনি খাবার খাওয়াতে পারবেন। এবং উপরে দেখবেন আপনার ১০-২০ তলা উপরে, গুহার ছাদের মধ্যে হাজার হাজার বাদুড় কিচিরমিচির করছে। তার উপর দিয়ে আপনারা পাই এ ফেরত আসলে একটা খুবই চমৎকার এক্সপেরিয়েন্স আছে এখানে বলে জঙ্গল টিউবিং। আপনারা মূলত ‍টিউবেবর উপর চড়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাবেন। নদী আপনাদেরকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। চিন্তা করবেন না নদী বেশি গভীর না। কিন্তু মাঝে মাঝে বেশ কয়েকটা জায়গায় থামবে যেখানে বিভিন্ন পার্টি হচ্ছে বা মিউজিক বাজছে। তো খুবই মজার একটা ইভেন্ট আমি বলবো। আসলে পাই-এ এসে অনেকই অনেক দিন থেকে যায়। আমি মাত্র ১২ দিনের জন্য আটকিয়ে ছিলাম, খুব বেশি দিনের জন্য আটকাইনি।

কোহ তাও

কোহ তাও

এটা হচ্ছে দেশের সাউথইষ্ট দিকে গালফ অফ থাইল্যান্ডে দ্বীপগুলোর মধ্যে একটা। এবং এটা হচ্ছে আমার প্রিয় দ্বীপ, পুরো থাইল্যান্ডের মধ্যে। এখানেও আমি দুই সপ্তাহের বেশি ছিলাম। এই জায়গাটা হচ্ছে স্কুবা ডাইভিং এর জন্য খুবই বিখ্যাত। কিন্তু এখানে খুব সস্তায় আপনি স্কুবা ডাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন। যেটা করতে ৩০-৪০ হাজার টাকা লাগে, অন্য দেশে এক লাখ টাকার মতোও লাগতে পারে। তো অনেক দেশের মানুষ এসে এখানে স্কুবা ডাইভিং লাইসেন্স করে। তারপর বিভিন্ন স্কুবা ডাইভিং ট্রিপে যায়। আমার লাইসেন্স আগে থেকেই ছিল, এখানে আসার আগে। তাও এখানে আমি কয়েকটা মজার ডাইভে গিয়েছি। এবং শুধু স্কুবা ডাইভিং বাদেও এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর বীচ আছে, অনেক সুন্দর সূর্যাস্ত আছে। যেটা আপনি বীচ থেকেও দেখতে পারবেন বা পাহাড়ের উপরের ভিউপয়েন্ট গিয়েও দেখতে পারবেন। এবং অবশ্যই এখানেও অনেক মজার মজার নাইট লাইপ বা পার্টি আসে।

তো এই ছিলো আমার  থাইল্যান্ড ভ্রমণ। মনে করি আমার এই ব্লগ পোষ্ট আপনার ভ্রমণকে আরও বেশি সহজ করবে। এতক্ষণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ। কথা হবে অন্য কোন দেশ ভ্রমণ নিয়ে ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন।

أحدث أقدم