ইলন মাস্ক কিভাবে বিশ্বের সেরা ধনী হলেন?
সফলতার কোন শর্টবাট রাস্তা নেই। সফল হতে হলে পরিশ্রম করতে হবে এবং নিজের লক্ষ্যে অটুট থাকতে হবে। আর এই ধ্রুব সত্যটাই মনে প্রাণে মানেন পৃথিবীর র্শীষ ধনী ইলন মাস্ক।
মাত্র 12 বছর বয়স থেকে তিনি তার সফলতার চাকা ঘুরাতে থাকেন। বিশ্বের 150টি দেশের চাইতেও ধনী ইলন মাস্ক। কিন্তু কিভাবে সম্ভব হয়েছিল ইলন মাস্কের এই অবিশ্বাস্য উস্থান। আজকের ইলন মাস্কের কিছু অজানা তথ্যই তুলবো আপনাদের সামনে।
আপনার যখন 12 বছর বয়স তখন আপনি কি করেছেন? এটা কি আপনার মনে আছে? তবে ইলন মাস্ক তার 12 বছর বয়সে কম্পিউটার গেম বিক্রি করে 500 ডলার আয় করেছিলেন। তিনি মাত্র 27 বছর বয়সে কোটিপতি হতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি করে বিশ্বের সেরা সেরা সম্পদশালী ব্যক্তি হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছেন।
আরোও করেছেন স্যাটেলাইট, রকেট, সোশ্যাল মিডিয়া কোথায় নেই তার পদচারণা। আর তাকেই নাকি ছোটবেলায় লাজুক হওয়ায় বুলিং এর শিকার হতে হয়েছিল। মাত্র 16 বছর বয়সে ভাই কিম্বল ও কাজিনদের সঙ্গে বাসার পাশেই ভিডিও আর্কেড প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন ইলন মাস্ক। তারা জায়গা ভাড়া নেয়ার জন্য শহর কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ফর্ম পূরণ করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে শহর কর্তৃপক্ষ জানায় জায়গা ভাড়া নেয়ার মতো উপযুক্ত বয়স তাদের হয়নি। এই জন্য তাদের এই উদ্যেগ ব্যর্থ হয়।
17 বছর বয়সে জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ইলন মাস্ক। তিনি ছিলেন স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের একজন। পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি করতে ভর্তি হয়েছিলেন কিন্তু দুদিন পরেই ছেড়ে দেন স্ট্যানফোর্ড। বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে ইলন মাস্ক তার প্রথম কোম্পানি জিপ টু শুরু করেন। চার বছর পর জিপ টু বিক্রি করেছিলেন 30 কোটি ডলারে।
ইলন মাস্কের সবচেয়ে সফল উদ্যোগ বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টেসলা। কিন্তু এই কোম্পানির ধারণা তার মাথা থেকে আসেনি। 2003 সালে মার্টিন এভারহার্ট ও মার্ক টারপেনিং টেসলা প্রতিষ্ঠা করেন। এক বছর পর মাস্ক এতে বিনিয়োগ করে। মাস্ক 2004 সালে প্রথম দফায় সাড়ে 63 লাখ ডলার টেসলাতে বিনিয়োগ করেন। বর্তমানে তিনি টেসলার প্রধান নির্বাহী।
টেলার ইতিহাসে যখন বেশ খারাপ সময় তখন ইলন মাস্ক তার বৈদ্যুতিক গাড়ির এই উদ্যোগ গুগলের কাঝে প্রায় বিক্রিয় করে দিয়েছিলেন। 2013 সালে এই দুজনে 600 কোটি ডলারের টেসলা কেনাবেচার সিন্ধান্ত নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত টেসলা বিক্রি হয়নি।
হ্যারি ফ্রিকার অ্যাডহো এবং ক্রিস্টোফার পেইনের সঙ্গে ইলন মাস্ক অনলাইন ব্যাংক এক্সকম প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি তার সময়ের জন্য নতুন উদ্ভাবন ছিল। তিনি আরো একটি দুর্দান্ত প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন পেপাল। পেপাল অনলাইন পেমেন্টের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্লাটফর্মগুলোর একটি। পেপাল তার সবচেয়ে সফল কোম্পানিরও একটি। কিন্তু তিনি এটি পরে ইবেতে বিক্রি করে দেন।
ইলন মাস্কের আরেকটি প্রতিষ্ঠান স্পেশ এক্স। এই প্রতিষ্ঠানের রকেট ডিজাইনের জন্য তিনি মার্কিন বিমান বাহিনী ও নাসার সঙ্গে বড় চুক্তি করেছিলেন। তিনি সামরিক মিশন পরিচালনার প্রকল্প গ্রহণ করেন। 2025 সালের মধ্যে মাস্ক নাসার সহায়তায় মহাকোশে একজন নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন।
2006 সালে মাস্কের চাচাতো ভাইয়েরা মিলে প্রতিষ্ঠা করেন সোলার সিটি। এই প্রতিষ্ঠানে মাস্ক পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। তিনি ছিলেন তাদের প্রধান আর্থিক সহায়তাকারী। মাস্ক টেসলার মাধ্যমে 2016 সালে সোলার সিটিকে 2.6 বিলিয়ন ডলারের স্টকের বিনিময়ে কিনে নেয়। 2022 সালে 44 বিলিয়ন ডলারে টুইটার কেনার উদ্যেগ নেন ইলন মাস্ক। পরে দীর্ঘ ছয় মাস নানান নাটকীয়তার শেষে টু্ইটারের নিয়ন্ত্রণ নেন ইলন মাস্ক।
এছাড়াও ইলন মাস্ক 2015 অলাভজনক স্ংস্থা ওপেন এআই প্রতিষ্ঠা করেন। 2016 সালে তিনি নিউরালিংক এবং বোরিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রথম ব্যক্তি হিসেবে 40000 কোটি বা 400 বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের মালিক হওয়ার রেকর্ড গড়লেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ব্লমবার্গের মতে তার কোম্পানি টেসলা এবং স্পেস এক্স বাজার মূল্য দ্রুত বৃদ্ধি এই মাইল ফলক অর্জনের প্রধান ভূমিকা রেখেছে। তবে ফোর্স সাময়িকের আলাদা এক হিসাবে মাস্কের বর্তমান সম্পদের পরিমাণ 3680 কোটি েডলারের এমটাই তথ্য দিয়েছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া।